বেঁচে থাকার অর্থ নয় নি-ছক একটা জীবন খুঁজছি। এলোপাথাড়ি হাতড়াচ্ছি ঘুম-জাগা-রাঁধা-খাওয়া আর অনেকখানি অফিস-অফিস খেলার ফাঁক দিয়ে। স্পষ্টত জানি যে এভাবে জীবন এর দেখা মেলে না, দিন কাটে খালি। দিন কাটানোর অভ্যেস ভেঙে দেয়ার মত কিন্তু কিছুই করছি না। শুধু দিনগুলির দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে গাল দিচ্ছি। কোন এক ফাঁকে বসছি খাতা-কলম নিয়ে ছবি আঁকব বলে। ছবি আঁকছি। লম্বা লম্বা সরলরেখার ছবি, যাদের কেউই নিপাট সরল আর হয়ে উঠছে না। সোজা রাস্তায় হাঁটবে বলে বেরিয়ে তারপর দোল খাচ্ছে। দোল খেতে খেতে হাঁ করে তাকিয়ে থাকছে বোকাবাক্সের দিকে। খেই হারিয়ে ভাবছে কি যেন ভাবছিল?! তারপর ভাবা শেষ হয়ে যাচ্ছে। একটা ছক-কাটা সাদা মেঝের চৌকো ঘরে ঘুরপাক খাচ্ছে একই বৃত্ত ধরে। তারপর দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে। খাতা বন্ধ করে আমি প্রিমিয়াম ভরছি, ধুলো ঝাড়ছি, আসবাব কিনছি। একটা ছোট্ট হলুদ টেবিলের জন্য সেই কবে থেকে অপেক্ষা করে বসে আছি। সাদা-কালো-বাদামীর মধ্যে একটুখানি হলুদ। টেবিলটা চলে এলে আমি কদিন জীবন খুঁজব না। ছত্তিরিশশ মাইল দূরের অনর্থক গোলযোগ নিয়ে হয়ত মেতে উঠব হঠাৎ, বিন্দুমাত্র যুক্তিগ্রাহ্য কারণ ছাড়াই। নাওয়া খাওয়া করব কোনক্রমে, অফিস চলবে কারণ আজকাল ঘোর-এর মধ্যে অনেক রকম ভেজাল। তাছাড়া আমার কাজে অমুকের তমুকটা উদ্ধার হচ্ছেই। থামা যায় না। এ সবের ফাঁকে কবে যেন ভুলে যাব হলুদ টেবিলটার দিকে তাকাতে। টেবিলটার ওপর ধুলো জমে প্রায় বাদামি হয়ে যাবে। তারপর সম্বিৎ ফেরাবে পাশে পড়ে থাকা পাত্র। আবার হাত-পা-আত্মা কাচিয়ে নিয়ে হলুদ টেবিলটার ধুলো ঝাড়ব। দেখলাম টেবিলটা আছে, হলুদ কোথাও একটা হাঁটা দিয়েছে। অযত্নের বিরক্তিতেই হয়ত। তাই এবার আমি সদ্য গজানো স্নেকপ্ল্যান্টটা দিয়ে টেবিলটা ঢেকে দেব। তারপর আবার নি-ছক একটা জীবন খুঁজব, বেঁচে থাকার অর্থ নয়।