সোমবার, ১৫ আগস্ট, ২০২২

টিকটিকি

গর্ত গভীর হয়ে চলেছে আস্তে আস্তে
আজন্ম টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যেতে যেতে টিকটিকি হয়ে উঠেছি পুরোদস্তুর। 

মন দিয়ে, পরিশ্রম দিয়ে মশা মাছি খেয়ে চলেছি। আমার কাজ বা কর্তব্য কিছু একটা এই মশা মাছি খেয়ে টিকে থাকা। তা টেঁকশই ভাবেই টিকে ছিলাম বহুকাল। এবার দেখতে পাচ্ছি ভেতরে ঘুণ ধরেছে। পেটের ভেতরে সারি সারি উই ঢিপি, নানা রকম ডিজাইন। 

টিকে আছি। বহুকাল আগে কোনো এক দিন টিকে থাকার লড়াই ছিল জীবন। 
এখন তা অভ্যাস 
লড়াই টা নয়, টিকে থাকা। আমার টিকে থাকার অভ্যাস হয়ে গেছে। 

সোমবার, ২ মে, ২০২২

মৃত্যুব্যস্ত

 এখন মৃত্যুর সময়, কাছের ও দুরের সমস্ত মানুষের মৃত্যুর সময়। তোমার, আমার, তাদের... সকলের মৃত্যুর সময়। মৃত্যু দুবছর আগেও সবসময়ই সম্ভাব্য ছিল, তবে এখন অনেক বেশী গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে। গতবছর আমরা রেলস্টেশন-এ মা-এর মৃতদেহের সাথে খেলতে থাকা... মৃত মা কে ডাকতে থাকা শিশুকে দেখেছি। ছুটিয়ে পোস্ট করেছি (অ)সামাজিক মাধ্যমে। কেন এমন হল? রাষ্ট্রের দোষ না আমাদের? ইত্যাদি নানারকম কথা। সে শিশু এখন কোথায়, আমি জানি না। 

আপনি জানেন কিনা তাও জানি না। 

আপনার বা আমার কার হাতেই খুব একটা সময় নেইএকে অপরের সাথে কথা বলার। একে অন্যের কথা শোনার তো একদমই সময় নেই। স্ক্রীন স্ক্রোল করার সময় অবশ্য আমি বের করে নিয়েছি ঠিক। ওপিনিয়নেটেড মানুষ আমি। কাজ সেরে ওইটুকু করবার জন্যে না হয় একটু রাত জেগে শরীরপাত করলাম। 

রেললাইনে ও রেললাইনের ধারে ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়া দেহগুলির মরদেহ হয়ে যাওয়া শুনেছি, দেখেছি। আবার কথার পিঠে কথা ফেলে এক্কা দোক্কা খেলেছি। দোষ খোঁজাখুঁজি চলেছে বিস্তর। এসবের ফাঁক গলে মৃত্যু ধীরে ধীরে এগিয়ে এসেছে আমাদের সকলের কাছে। সংবাদমাধ্যম ও (অ)সামাজিক মাধ্যম থেকে গুটি গুটি পায়ে ঢুকে পড়েছে আমাদের কাছের বৃত্তে। প্রথমে খানিক কাছের খবর হয়ে, দূরভাষ বেয়ে। তারপর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই একদম ঘরের মধ্যে। যমদূত যখন গালে হাত দিয়ে অপেক্ষা করছে ঠিক ঘরের দরজার সামনেই, ঠিক সেই সময়টুকুতে খানিক শব্দহীন হয়েছি আমরা। ওই খানিক ব্যস্ততা আপনার জনকে বাঁচাতে। 

বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২২

কথা

রাতের অন্ধকার এ নিজের মুখোমুখি বসতাম কাগজ কলম টেনে কোন এক কালে।

এখন সারাদিন ব্যস্ত থাকি। ব্যস্ততার বিস্তর সুবিধের গা লেপ্টে থাকি। 

ব্যস্ততার বিস্তর সুবিধে।
ব্যস্ততার অবিরাম শব্দের নিচে নিশ্চিন্তে চেপে ঢেকে রাখা যায় মাথার ভেতরে চলতে থাকা কথা। 
যে কথারা চিৎকার করে মাথা ভার করে রাখে হরদম। ব্যস্ততার মোড়কে শান্ত রাখি তাদের সাইরেন।

কথাহীন মাথা নিয়ে ব্যস্ততা বয়ে চলি বাস্তব মতে, ঘোর বাস্তব মতে। কত ধানে কত চাল মেপে বুঝে দাবার চাল সাজাই। এখন আর আগের মত ঝুপ করে বিশ্বাসে ডুব মেরে হাবুডুবু খাই না। 

কথাহীন মাথা নিয়ে গতিজাড্যে দুলি, 'pro'গতিশীল পথে নাক বরাবর চলি। 

সোমবার, ৭ মার্চ, ২০২২

একটি অ প্রেমের বা প্রেমের গল্প

তুমি বললে প্রেম, আমিও দিব্যি মেনেই নিয়েছিলাম। তারপর হঠাৎ একদিন আমি কি গায়ে জড়াব, কার সঙ্গে কথা বলব, কোন বিষয়ে কথা বলব এবং বলব না সব কিছুর অধীশ্বর ভেবে ফেললে নিজেকে। একটা বিকট রকম স্বেচ্ছাচারী, জোর খাটানো বাউন্ডুলেপনায় আমার একটা পর একটা দিন মুচড়ে দিয়ে থাকলে। প্রশ্ন করলাম, বার বার প্রশ্ন করলাম। অনুরোধ, আবদার, চোখের জল, ঝগড়া ইত্যাদির পাহাড় ডিঙিয়ে শ্রান্ত হয়ে আবার প্রশ্ন করলাম। তুমি তবু বললে প্রেম। আমার মেনে নেয়ার ক্ষমতা এতদিনে আস্তে আস্তে কমে এসেছে অনেকটাই। 

এরপর? নাহ, নতুন কিছুই নয়। চলতে থাকল একই রকম ভাবে সবকিছু। মাঝে মাঝে ক্ষমা চাওয়া, কান্নাকাটি, ইত্যাদি। আর তারপর, আকাশ ফাটানো চিৎকার চেঁচামেচি এবং তার সাথে নতুন আমদানি করা উপেক্ষা। এক তরফা উপেক্ষার পাহাড় ও জমা হল। 

তারপর? তারপর আমি আবার অনেক প্রশ্ন করলাম। তুমি আবার বললে প্রেম। আমি এবার চিৎকার করে বলে উঠলাম, না আ আ আ আ... প্রেম নয়, বিন্দুমাত্র প্রেম নয়। এ কেবল দখলদারির ছদ্মবেশ। গা ঝেড়ে খুলে ফেললাম সব। অনেক বছরের জমা করা ভালোলাগা, ভালোবাসা, মায়া সব। স অ ব। গা ঝেড়ে খুলে ফেললাম সব। সেদিন প্রথম বুঝলাম মিথ্যের ভার নামিয়ে রেখে উলঙ্গ হওয়া কি শান্তির। 

তুমি তখনও চিৎকার করে চলেছ প্রেম, প্রেম, প্রেম। আমি বুঝলাম, তুমি নিজেও বন্দী যুগ যুগ ধরে নিশ্চিন্তে চলতে থাকা খাঁচায় বাঁধা পথে। তবে মুক্তির রাস্তায় তোমার কাজ নেই। খাঁচাকেই ভালোবেসে ফেলেছে যে। বুঝলাম, কেন এত তীব্র বিশ্বাস তোমার চিৎকারে! তুমি আজও চিৎকার করে চলেছ প্রেম, প্রেম, প্রেম। মাঝে মাঝে নানা অলি গলি বেয়ে সে সব শব্দ এসে পরে এখনও আমার কাছে। 

তারপর আমি আবার হাঁটা দিই। ঠিক যেমন সেদিন দিয়েছিলাম আর ফিরে দেখব না জেনে। হাঁটতে থাকি এ রাস্তায়, সে রাস্তায়। তোমার চিৎকার চলছে। আর চলছে আমার যাত্রা। একে অন্যের চেয়ে লক্ষ্য যোজন দূরে, ঠিক যেমনটা হওয়া উচিৎ। 

আমি হাঁটছি, সাথে আছে তারা যাদের প্রেম বলে চিৎকার করতে হয় না রোজ। সাথে আছে। সাথে নিয়েছি তাদের, যাদের ' প্রেম ' বলে চিৎকার করতে হয় না রোজ। সাথে থাকুক তারাই, যাদের ' প্রেম ' বলে চিৎকার করতে হয় না রোজ। 


To embrace my darks!

Do I mean something to you?                                       He asks. The words echo and knocks on the doors that I kept in the darkest...